শুক্রবার, ৩১ জুলাই, ২০১৫

পবিত্র রিসালত উনার ধারায় দুনিয়ায় সম্মানিত দ্বীন-ইসলাম উনার পুনরুজ্জীবনে হিজরী এগারো শতকের সুমহান মুজাদ্দিদ, আফদ্বালুল আউলিয়া, ক্বাইয়্যুমে আউওয়াল, মাহবুবে সুবহানী, কুতুবে রব্বানী, হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার অনন্য অবদান সম্পর্কে কিঞ্চিৎ আলোকপাত

যে সব সূক্ষ্মদর্শী মাহবুব ওলীআল্লাহ, সুমহান মুজাদ্দিদ উনারা সম্মানিত ইসলাম উনাকে দুনিয়ায় হাক্বীক্বীভাবে আবাদ করেছেন, সম্মানিত সুন্নত মুবারক যিন্দা করেছেন, বাতিল ধ্বংস করে হক্ব মত ও পথ প্রতিষ্ঠা করেছেন, মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহু ওয়া তায়ালা এবং উনার প্রিয়তম রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সঙ্গে দায়িমী নিগূঢ় নৈকট্য-সম্পর্ক স্থাপন করেছেন এবং মানুষকে সে মুবারক সম্পর্ক স্থাপন করিয়ে দিয়েছেন, হিজরী এগারো শতকের সুমহান মুজাদ্দিদ, ইমামে রব্বানী, মাহবুবে সুবহানী, আফদ্বালুল আউলিয়া, ইমামুল আউলিয়া, সিরাজুল উম্মত, ক্বাইয়্যুমে আউওয়াল, কুতুবুল ইরশাদ, নূরুণ আযীম, ছিলাহে উম্মত, ইমাম, মুজাদ্দিদে আলফে ছানী হযরত শায়েখ আহমদ ফারুক্বী সিরহিন্দী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনাদের অন্যতম। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন : “একাদশ হিজরী শতকের শুরুভাগে মহান আল্লাহ পাক তিনি এমন এক সুমহান ব্যক্তিত্ব উনাকে যমীনে পাঠাবেন, যিনি হবেন এক বৃহৎ নূর মুবারক। উনার নাম মুবারক হবে আমার পবিত্র নাম মুবারক উনার অনুরূপ। দুই অত্যাচারী যালিম বাদশাহ’র রাজত্বকালের মাঝে তিনি আবির্ভূত হবেন। উনার সুপারিশে অগণিত মানুষ সম্মানিত জান্নাতে প্রবেশ করবেন।” সুবহানাল্লাহ!

৯৭১ হিজরীর পবিত্র শাওওয়াল শরীফ উপ-মহাদেশের পাঞ্জাব প্রদেশের সিরহিন্দ শরীফে হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ এবং অতঃপর উনার অপ্রতিরোধ্য তাজদীদ বাস্তবায়নে মানুষের কাছে বর্ণিত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার সত্যায়ন প্রতিভাত হয়। সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র খৎনা অবস্থায় তিনি যমীনে পবিত্র তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন। তিনি কখনোই সাধারণ শিশুর মতো কাঁদতেন না। উনার বুর্যর্গ পিতা হযরত শায়েখ আব্দুল আহাদ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছিলেন একজন সূক্ষ্মদর্শী মাহবুব ওলীআল্লাহ। আমিরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত ফারুকে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার আওলাদ প্রখ্যাত ছাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সঙ্গে ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম উনার বিনতুন হযরত ফাতিমা আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র শাদী মুবারক অনুষ্ঠিত হয়। সেই পবিত্র বংশেই হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। তাই দেখা যায়, সম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম উনার দিক থেকে তিনি ফারুক্বী এবং সম্মানিত মাতা আলাইহাস সালাম উনার দিক থেকে তিনি সাইয়্যিদ। সুবহানাল্লাহ!
ইলমে মা’রিফাত ছিলো হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বুযূর্গ পূর্বপুরুষ উনাদের মুবারক বংশগত সম্পদ। মাত্র ৬ বছর বয়স মুবারকে তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ হিফয করেন। উনার বুযূর্গ পিতা হযরত শায়েখ আব্দুল আহাদ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছিলেন মুহব্বত-মা’রিফাত জগতের এক উজ্জ্বলতম নক্ষত্র। উনার মুবারক ছোহবত ছিলো স্পর্শমণিতুল্য। হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বুযূর্গ পিতা আলাইহিস সালাম উনার নিকট শিক্ষা গ্রহণের পাশাপাশি কানপুরস্থ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে জগৎ-বরেণ্য আলিমগণ উনাদের নিকট পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র তাফসীর শরীফ, পবিত্র ফিক্বাহ শরীফ, সাহিত্য, কাব্য, ইতিহাস, ভূগোল, দর্শন ও বিজ্ঞানসহ সম্মানিত ইসলাম উনার সকল শাখা-প্রশাখায় বেমেছাল ব্যুৎপত্তি অর্জন করেন। মাত্র ১৭ বছর বয়স মুবারকে তিনি একাডেমিক সকল শিক্ষা সমাপ্ত করেন। সুবহানাল্লাহ!
তিনি উনার বুযূর্গ পিতা শায়েখ হযরত আব্দুল আহাদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট ১৪টি তরীকার কামালত হাছিল করেন। শুরু হয়, পবিত্র গারে হেরা উনার সম্মানিত সুন্নত অনুসরণে গভীর তন্ময়তা ও গভীর মনোনিবেশে সীমাহীন মুহব্বত-মা’রিফাত, তা’য়াল্লুক-নিসবত উনাদের অপার সমুদ্রে হাজার বছরের মুজাদ্দিদ, হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সার্বক্ষণিক অবগাহন। সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র হজ্জ সমাপনের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে লাহোরে অন্তরঙ্গ বন্ধু হযরত মাওলানা হাসান কাশ্মিরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সহায়তায় হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সম্মানিত নকশবন্দ তরীকার বুযুর্গ হযরত খাজা বাকীবিল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট বাইয়াত হন। পবিত্র হজ্জ সমাপনের জন্য উনার আর পবিত্র মক্কা শরীফ যাওয়া হয়ে উঠেনি। উনার শান-মান, বুযূর্গী-সম্মান, মাক্বাম এতোই সীমাহীন উচ্চতায় যে, মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহু ওয়া তায়ালা তিনি পবিত্র কা’বা শরীফ উনাকে সিরহিন্দ শরীফে (হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার স্থান) নিয়ে আসেন। পবিত্র সিরহিন্দ শরীফ থেকেই তিনি পবিত্র কা’বা শরীফ তাওয়াফ করেন। পবিত্র ওই স্থানটি এখনো চিহ্নিত রয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র রবীউল আওয়াল শরীফ উনার ১০ তারিখ লাইলাতুল জুমুয়া নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে হাজার বছরের মুজাদ্দিদ হিসেবে লক্বব মুবারক হাদিয়া করেন এবং এ মর্মে উনার মাথা মুবারকে আযিমী পাগড়ী মুবারক পড়িয়ে দেন। সুবহানাল্লাহ!
হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার অনন্য তাজদীদ হলো ‘ওয়াহ্দাতুশ শহুদ’ উনার প্রতিষ্ঠানিক কাঠামো রূপায়ন এবং তা বর্ণনা। বিলায়েতে ছোগরা মাক্বাম হাছিলকারীগণ সাধারণত: ‘ওয়াহ্দাতুল অজুদ’, অর্থাৎ ‘সবই মহান আল্লাহ পাক (হামা উসত)’- এই আক্বীদায় বিশ্বাসী হয়ে থাকেন। এমন আক্বীদা আক্বল এবং সম্মানিত শরীয়ত উনার বিপরীত।
মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহু ওয়া তায়ালা উনার এবং মাখলুকের ভিন্ন সত্তা ও ভিন্ন অবস্থান সম্পর্কিত উপলব্ধি ও আক্বীদাকে ‘ওয়াহ্দাতুশ শহুদ’ (হামা আয উসত) বলা হয়। ‘ওয়াহ্দাতুশ শুহুদ’ মাক্বামে উপনীত না হওয়া পর্যন্ত ‘ওয়াহ্দাতুল অজুদ’ সম্পর্কিত বাতিল ধারণার অবসান হয় না। ‘ওয়াহ্দাতুল অজুদ’ ও ‘ওয়াহ্দাতুশ শুহুদ’-এই দুই মাক্বাম উনাদের ব্যবধান ও হাক্বীক্বত সম্পর্কে পূর্বে সুস্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যা, সংজ্ঞা বা প্রতিষ্ঠানিক কাঠামো ছিলো না। হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এতদ্সংক্রান্ত ত্রুটিযুক্ত ধারণাজনিত জটিলতা থেকে বিমুক্তি ঘটান। সুবহানাল্লাহ!
হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মোগল স¤্রাট জালালুদ্দীন আকবর ও জাহাঙ্গীর- সৃষ্ট ফিৎনা সমূলে উৎপাটিত করেন। আকবরের শাসনামলে মানুষ তাওহীদ ও রিসালতের পরিবর্তে লাত-মানতের খেয়ালে মগ্ন হয়ে পড়ে। আকবর প্রবর্তিত বাতিল মতবাদ ‘দ্বীন-ই-ইলাহী’-এর অপশাসনে ঈমান-আক্বীদা হারিয়ে মানুষ বিদয়াত, শিরক ও কুফরীতে লিপ্ত হয়ে পড়ে। অবজ্ঞা ও অবহেলা ভরে মানুষ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত সুন্নত মুবারক ও আহকাম মুবারকের বিলুপ্তি ঘটায় এবং উনার বিরোধিতা শুরু করে দেয়। নাউযূবিল্লাহ!
সর্বনিকৃষ্ট দুনিয়াদার আলিম আবুল ফযল ফৈজী, মোল্লা মুবারক নাগৌরী এদের প্ররোচনায় আকবর সৃষ্ট জঘন্য ফিৎনার অতি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা নিম্মরূপ :
দিনে ৪ বার সূর্য পূজা। জন্মান্তরবাদে বিশ্বাস। কুকুর ও শুকরকে সম্মান প্রদর্শন। সম্মানিত কালিমা শরীফ পরিবর্তন। দ্বীন-ই-ইলাহী প্রবর্তন। সিজদা প্রথার প্রচলন। সুদ, জুয়া, শরাব ইত্যাদি হালাল ঘোষণা। ‘আহ্মদ’ ও ‘মুহম্মদ’ নাম রাখা নিষিদ্ধকরণ। দাড়ি রাখা হারাম ঘোষণা। আরবী পড়ালেখা বন্ধ ঘোষণা। পবিত্র ওহী, পবিত্র মিরাজ শরীফ অস্বীকার। সূর্য পূজায় এক পা তুলে দাঁড়িয়ে থাকা। মাথায় টিকি রাখা। গরু জবাই নিষিদ্ধ ঘোষণা। চাচাতো বোন, মামাতো বোন, খালাতো বোন বিয়ে করা নিষেধ ঘোষণা। নিরক্ষর আকবরের মুজতাহিদ হওয়ার বাসনা। পবিত্র জুমুয়ার নামাযে তার খুৎবা দেয়ার অপপ্রয়াস। ফরজ গোসলের বিধান বাতিল ঘোষণা। ব্যভিচার চালুকরণ। ফরজ পর্দা রহিতকরণ। খৎনা বন্ধ ঘোষণা। কবরে লাশের মাথা পূর্ব দিকে এবং পা পশ্চিম দিকে রাখার নিয়ম জারীকরণ। ফৈজী কুকুরের সঙ্গে থাকতো। একসঙ্গে খানা খেতো। সে দিনে অন্ততঃ দু’বার কুকুরের জিহ্বা চুষতো। সে মাযহাব মানতো না। নাউযূবিল্লাহি! নাউযূবিল্লাহি!! নাউযূবিল্লাহি!!!
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ অনুসরণে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার প্রিয়তম রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি মুবারক লাভের ক্ষেত্রে সালিকগণের পথ পরিক্রমার বিভিন্ন স্তর অতিক্রমণের সোপানকে তরীক্বত বলা হয়। এ মর্মে সূক্ষ্মদর্শী মাহবুব ওলীআল্লাহ উনাদের পৃথক প্রেক্ষিত রচিত ও অনুশীলিত হয়েছে যুগে যুগেই। যদিও উনাদের মহিমাময় কামালত পূর্ণতালাভ করেছে মহামিলনের একই মঞ্জিলে। সুবহানাল্লাহ! এভাবে উৎপত্তি ও ব্যাপ্তির স্বকীয় নির্যাস নিয়ে উদ্ভব হয়েছে সম্মানিত বিভিন্ন তরীক্বার। উপ-মহাদেশে ৪টি মাশহুর তরীক্বা উনাদের নাম: ১. চিশতীয়া ২. ক্বাদেরিয়া, ৩. সোহরাওয়ারদিয়া এবং ৪. নকশবন্দিয়া মুজাদ্দিদিয়া। প্রকৃতপক্ষে তরীক্বা ৪টি নয়, অসংখ্য, যদিও বর্তমানে হক্ব সিলসিলার সংখ্যা অতি নগন্য। হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি পূর্ব থেকেই চলে আসা নকশবন্দীয়া তরীক্বার উন্নয়নসাধন করেন। তিনি মুজাদ্দিদিয়া তরীক্বার মহাসম্মানিত ইমাম। সুবহানাল্লাহ! তিনি পবিত্র নুবুওওয়াত ও রিসালত উনাদের কামালতের সঙ্গে এ তরীক্বার মুবারক সেতুবন্ধন রচনা করেন। সুবহানাল্লাহ!
সৃষ্টির সর্বনিকৃষ্ট দুনিয়াদার আলিমদের সমন্বয়ে মোগল স¤্রাট আকবর- সৃষ্ট যাবতীয় ফিৎনা সমূলে উৎপাটনের জন্য হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার দুর্বার তাজদীদের প্রকাশ ও বাস্তবায়ন এবং আকবর শাহী ধ্বংস করার জন্য উনার যাবতীয় কর্মপ্রয়াস অনিবার্য হয়ে উঠে। সুবহানাল্লাহ!
১৬০৬ ঈসায়ী সনে অপঘাতে আকবরের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। সে সম্মানিত ইসলাম বিরোধী জঘন্য মতাদর্শ সংক্রামিত করে যায় পুত্র জাহাঙ্গীরের মন ও মনেন। মানুষ বদল হলো, কিন্তু আদর্শ বদল হলো না। অবশেষে জাহাঙ্গীর হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মুরীদ হয়। সীমিত পরিসরে হলেও মোগল সাম্রাজ্যের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয় সম্মানিত দ্বীন-ইসলাম উনার পবিত্র বিধিমালা। সুবহানাল্লাহ!
বিদয়াত, বেশরা, বাতিল ও গুমরাহী নিরসনে এবং সম্মানিত ইসলাম উনার হাক্বীক্বী আবাদকরণে, সম্মানিত সুন্নত মুবারক যিন্দা করণে, আক্বীদা বিশুদ্ধকরণে হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মুবারক অবদান সীমাহীন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, ইতিহাসে এবং তাযকিরা গ্রন্থে উনার সম্পর্কিত মুবারক আলোচনা অত্যন্ত সীমিত। নাউযুবিল্লাহ! হাজার বছরের সুমহান মুজাদ্দিদ, হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ছানা-ছিফত এবং উনার সম্পর্কিত মুবারক আলোচনা ব্যাপকভাবে হওয়া দরকার। একইসঙ্গে উনার পবিত্র জীবনী মুবারক শিক্ষা সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করা অত্যাবশ্যক। আকবর- সৃষ্ট ফিৎনার সময় হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পবিত্র আবির্ভাব না ঘটলে সমস্ত দুনিয়া কুফরীতে ভরে যেতো। হয়তো ‘দ্বীন-ই-ইলাহী’ চালুও হয়ে যেতে পারতো। নাউযূবিল্লাহ!
এগারো শতকের সুমহান মুজাদ্দিদ, হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি পবিত্র ৬৩ বছর বয়স মুবারকে ১০৩৪ হিজরী সনে, ১৬২৪ ঈসায়ী সনে পবিত্র ২৮ ছফর শরীফ মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহু ওয়া তায়ালা উনার পবিত্র দীদারে গমন করেন। সুবহানাল্লাহ!
http://www.al-ihsan.net/FullText.aspx?subid=1&textid=9453

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন