শনিবার, ১৪ মার্চ, ২০১৫

হযরত সুলত্বানুল হিন্দ, খাজা গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার শান-মান, বুযূর্গী ও ফযীলত.

হযরত সুলত্বানুল হিন্দ, খাজা গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মুরীদ হওয়ার ওয়াক্বিয়াটি নিজেই বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, আমি আমার শায়েখ হযরত উসমান হারূনী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাথে সাক্ষাৎ করতে গিয়ে দেখতে পেলাম যে, তিনি অসংখ্য বড় বড় আওলিয়া-দরবেশদের সাথে বসে মারিফাত তত্ত্ব সম্পর্কে আলাপ-আলোচনা করছেন। আমি উনার ক্বদমবুছি করার পর তিনি কিছুক্ষণ আমার মুখের দিকে তাকিয়ে রইলেন। অতঃপর আমার পরিচয় জিজ্ঞাসা করলেন।
আমি সংক্ষেপে আমার পরিচয় প্রদান করে উনার নিকট মুরীদ হওয়ার বাসনা জ্ঞাপন করলাম। তিনি আমাকে মসজিদে গিয়ে যুহরের নামায পড়ে সেখানে বসে থাকতে আদেশ করলেন। আমি অযু করে মসজিদে গিয়ে যুহরের নামায পড়ে সেখানেই বসে রইলাম। কিছুক্ষণ পর হযরত খাজা উসমান হারূনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মসজিদে উপস্থিত হয়ে আমাকে দুই রাকায়াত নামায পড়তে আদেশ করলেন। আমি উনার আদেশ পালন করলাম। অতঃপর পুনরায় আমাকে জোড় আসনে উপবেশন করতে আদেশ করলেন। আমি উনার সেই আদেশও পালন করলাম। এরপর আমাকে কিছু ছবক আদায় করতে বললেন। আমি ছবক আদায় করলাম। অতঃপর তিনি আমার ডান হাত উনার ডান হাতের মধ্যে নিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে আসমানের দিকে নজর করে বললেন, আজ আমি আপনাকে আল্লাহ পাক-উনার দরবার শরীফে হাযির করিয়ে দিলাম। তৎপর খাজা হযরত উসমান হারূনী রহমতুল্লাহি আলাইহি আমার মাথায় একটি টুপি পরিয়ে দিলেন এবং একটা কম্বল আমার গায়ে জড়িয়ে দিয়ে আদেশ করলেন বসুন।
হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা উনার আদেশের সঙ্গে সঙ্গে আমি তথায় বসে পড়লাম। তিনি আমাকে পুনরায় ছবক দিয়ে এখান হতে উঠে নির্জন হুজরায় একদিন এক রাত আল্লাহ পাক উনার ইবাদতে তথা মুরাকাবা-মুশাহাদায় কাটিয়ে দিতে বললেন। আমি তাই করলাম। পরদিন আমি উনার দরবার শরীফ-এ হাযির হলে আমাকে একান্ত নিকটে বসিয়ে বললেন, আমার দুআঙ্গুলের মাঝখানে দৃষ্টিপাত করুন। আমি তৎক্ষণাত উনার মুবারক দুআঙ্গুলের মাঝখানে দৃষ্টিপাত করলাম। তিনি আমাকে বললেন, আপনি কি দেখতে পাচ্ছেন? আমি বললাম মাশরিক হতে মাগরীব, শিমাল হতে জুনুব, নিম্নে দিকে তাহতাচ্ছারা এবং উপরের দিকে আল্লাহ পাক উনার আরশ পাক এবং এর মধ্যবর্তী আল্লাহ তায়ালা উনার আজমতের সৃষ্টিকুল আমার দৃষ্টিতে পড়ছে। সুবহানাল্লাহ! এই কথা শুনে উনি অত্যন্ত খুশি হয়ে বললেন, আপনার কর্তব্য শেষ হয়েছে।
উপরোক্ত ওয়াক্বিয়া থেকে নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ইলমে গইব এবং হাযির-নাযির হওয়ার বিষয়টিও সহজেই অনুধাবন করা যায়। কেননা একজন ওলীআল্লাহ যদি একদিন এক রাত ছবক আদায় তথা রিয়াজত-মাশাক্কাত করে কুল-কায়িনাত দেখতে পান, তাহলে যিনি সৃষ্টির উসীলা; যিনি সৃষ্টি না হলে ছবক, রিয়াজত-মাশাক্কাত-এর সৃষ্টি হতো না এমনকি কোন ওলীআল্লাহ উনারাও সৃষ্টি হতেন না। তাহলে উনার অবস্থাটা কেমন হবে। মূলত, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ইলমে গইব ও হাযির-নাযির অস্বীকারকারীদের উপরোক্ত ওয়াক্বিয়া থেকে ইবরত নছীহত গ্রহন করা উচিত।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন